চেন্নাইয়ে বড় হওয়া রামন ছোটবেলা থেকে বড়াবরই মেধাবী ছিলেন।বাবা ছিলেন একজন বিজ্ঞানের শিক্ষক। সিভি রামন মাদ্রাজের তৎকালীন প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯০৫ সালে গণিতে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক হয়েছিলেন।এই কলেজেই তিনি এমএতে ভর্তি হন।রসায়ন ছিল তাঁর প্রধান বিষয়।মাস্টার অফ সায়েন্স করার পর তিনি চলে আসেন কলকাতায় শিক্ষকতা করার জন্য়।কিছুদিন পর তিনি শিক্ষকতা ছেড়ে যোগদেন ইন্ডিয়ান অ্য়াসোসিয়েশন ফর দ্য় কালটিভেশন অফ সায়েন্সে।
এরপর এটাই হয়ে ওঠে তাঁর বিজ্ঞান সাধনার প্রধান ক্ষেত্র।সেখানে ১৯০৭ থেকে ১৯৩৩ পর্যন্ত তিনি তাঁর গবেষনার কাজ চালিয়ে যান । ১৯২১ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত হয় ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি কংগ্রেস। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে সেখানে যোগ দেন রমন। এটাই রমনের প্রথম বিদেশ ভ্রমণ। কয়েক দিনের এই সংক্ষিপ্ত ভ্রমণেই তাঁর সঙ্গে দেখা হল থমসন, রাদারফোর্ড, ব্র্যাগ সহ আরও অনেক বিশ্ববিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানীর।
১৯২১ সালে এক বার জাহাজে করে তিনি লন্ডন থেকে দেশে ফিরছিলেন।তখন তিনি খেয়াল করেনসমুদ্রের জলের রং নীল।তিনি জানতেন আকাশের রংও নীল লাগে, কারণ আকাশের বিশেষ বর্ণ ছটার জন্য।কিন্তু সমুদ্রের রং কেন নীল! এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই তিনি আবিষ্কার করেন বিখ্য়াত ‘রমন এফেক্ট’।
লম্বা গবেষণার পর অবশেষে ১৯২৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি সূত্র আবিষ্কার করেন। ১৬ মার্চ আনুষ্ঠানিক ভাবে এই সূত্র প্রকাশ করেন তিনি।সমুদ্রের জল নীল কেন ! তবে কি সমুদ্রের জলে আকাশের রঙের প্রতিফলন হয় বলেই সমুদ্রের জল নীল! এই তত্ত্ব মানলেন না রামন। কারণ রামন দেখলেন পোলারাইজিং প্রিজমের মাধ্যমে আকাশের প্রতিফলন আড়াল করার পরেও দেখা গেল সমুদ্রের জলের রং নীল। আসলে সমুদ্রের জল নিজেই আলো বিচ্ছুরণ করে, তাই জলের রঙ নীল।রমন এফেক্টের সূত্র ধরেই এসেছে একবর্ণা আলোকের ধর্ম, লেসার রশ্মি ইত্যাদি।১৯২৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারিতে এই যুগান্তকারী আবিষ্কার জন্য ১৯৩০ সালে রামন পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান।
No comments:
Post a Comment
Feel free to leave a comment.